যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা মূল্যসূচকের সাত মাসের সর্বোচ্চ বৃদ্ধি, ভাড়ার খরচে স্বস্তি
নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্যসূচকের বৃদ্ধি, যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। |
ওয়াশিংটন, ১১ ডিসেম্বর (গ্লোবাল টাইমস বাংলা) – নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা মূল্যসূচক (CPI) গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং হোটেল ও মোটেলের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় এ মূল্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। তবে ভাড়ার খরচ ধীরগতিতে বাড়ার কারণে এটি ফেডারেল রিজার্ভকে পরবর্তী সপ্তাহে ধারাবাহিক তৃতীয় সুদ হ্রাসে বাধা দেবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার শ্রম বিভাগ প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, নভেম্বর মাসে ভোক্তা মূল্যসূচক ০.৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি এপ্রিলের পর থেকে সবচেয়ে বড় মাসিক বৃদ্ধি। গত চার মাস ধরে সূচকটি ০.২% হারে বাড়ছিল। এই বৃদ্ধি মূলত খাদ্য খাত ও হোটেল/মোটেলের ভাড়ার খরচ বৃদ্ধির কারণে হয়েছে।
খাদ্য খাত ও ভাড়ার খরচ
খাদ্য পণ্যের দাম ০.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে গ্রোসারি সামগ্রীর দাম ০.৫% বেড়েছে। এর মধ্যে ডিমের দাম ৮.২% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এভিয়ান ফ্লু প্রাদুর্ভাবের একটি প্রভাব। অন্যদিকে, সিরিয়াল ও বেকারি পণ্যের দাম ১.১% হ্রাস পেয়েছে, যা ১৯৮৯ সালের পর সবচেয়ে বড় মাসিক পতন।
ভাড়ার ক্ষেত্রে, বাসস্থান খরচ ০.২% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা জুলাই ২০২১ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। এদিকে, হোটেল ও মোটেলের ভাড়া ৩.২% বৃদ্ধি পেয়েছে।
বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নভেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ২.৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অক্টোবরের ২.৬% বৃদ্ধি থেকে সামান্য বেশি। তবে, ২০২২ সালের জুন মাসে ৯.১% শীর্ষ থেকে এটি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
মরগ্যান স্ট্যানলির প্রধান অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এলেন জেন্টনার বলেছেন, "এই তথ্য ফেডারেল রিজার্ভকে তাদের পরিকল্পিত সুদ হ্রাসে আশ্বস্ত করবে।"
ফেডারেল রিজার্ভের ডিসেম্বর ১৭-১৮ তারিখের বৈঠকে ০.২৫ শতাংশ পয়েন্ট সুদ কমানোর সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত। তবে, আগামী বছরে সুদ হ্রাসের হার পূর্বের প্রত্যাশার তুলনায় কম হতে পারে।
ফেডের সুদের হার ও মুদ্রানীতি
২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত ফেড সুদের হার ৫.২৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়েছিল, যা বর্তমানে ৪.৫০%-৪.৭৫%। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এই হার বৃদ্ধির কারণে ফলাফল ইতিবাচক হলেও শ্রমবাজারে ধীরগতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষক স্টিফেন জুনাউ বলেছেন, "আমরা আগামী বছরে মুদ্রাস্ফীতির বড় কোনো ঝুঁকি দেখছি না। তবে, ট্যারিফ এবং অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তনের কারণে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের অগ্রগতি থমকে যেতে পারে।"
যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও এর প্রভাব পর্যবেক্ষণে এই তথ্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
গ্লোবাল টাইমস বাংলার শর্তাবলী মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url