টিকটক নিয়ে বাণিজ্য যুদ্ধে উত্তেজনা চরমে

টিকটকের লোগো এবং জাতীয় পতাকা, যা চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের প্রতীক।
টিকটক এবং জাতীয় নিরাপত্তা: চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিচ্ছবি।

নিউইয়র্ক, ৬ ডিসেম্বর (গ্লোবাল টাইমস বাংলা): ট্যারিফ আরোপ বা টেলিকম যন্ত্রপাতি নিষিদ্ধ করার মতো পদক্ষেপ তুলনামূলক সহজ ছিল। তবে টিকটকের পরিস্থিতি দেখাচ্ছে, বাণিজ্য যুদ্ধ যখন কঠিন হয়ে ওঠে, তখন তা কেমন হয়। মার্কিন আদালত চীনা-মালিকানাধীন সংস্থা ByteDance-এর সঙ্গে টিকটকের সম্পর্ককে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে স্পষ্টভাবে অভিহিত করেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপের দেশগুলোও এ বিষয়ে সতর্ক।

টিকটক এই সপ্তাহে দুই দফায় বড় আঘাত পেয়েছে। প্রথমত, মার্কিন আদালত একটি আইন বাতিল করার আবেদন খারিজ করে, যা ByteDance-কে টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম বিক্রি করতে বাধ্য করে। বিচারকেরা বলেন, কংগ্রেসের বহু বছরের দ্বিদলীয় তদন্ত যথেষ্ট প্রমাণ দিয়েছে যে টিকটক বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং এটি ব্যবহারকারীদের "বিশাল পরিমাণে ডেটা" সংগ্রহ করে। এই রায়ের ফলে টিকটকের বিকল্প প্রস্তাব, যা মার্কিন ডেটা আলাদা করার পরিকল্পনা করেছিল, কার্যত বাতিল হয়ে যায়।

দ্বিতীয়ত, রোমানিয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল হওয়ার পেছনে টিকটকের মাধ্যমে সমন্বিত প্রচারের অভিযোগ ওঠে। ইউরোপিয়ান কমিশন এ বিষয়ে টিকটকের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে, যা প্ল্যাটফর্মটির জন্য নতুন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

বাণিজ্য যুদ্ধের নতুন রূপ

মার্কিন এবং ইউরোপীয় রাজনীতিবিদরা চীনা কর্পোরেশন এবং তাদের রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। হুয়াওয়ে টেলিকম সরঞ্জামের নিষেধাজ্ঞা যেমন যুক্তরাষ্ট্র শুরু করেছিল, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যও পরে সেই পথে হাঁটে। তবে টিকটকের পরিস্থিতি অনেক বেশি জটিল।

টেলিকম যন্ত্রপাতি বদলানো বা সেমিকন্ডাক্টরের বিক্রি বন্ধ করা এক বিষয়, আর ১৭ কোটি মার্কিন নাগরিককে একটি জনপ্রিয় অ্যাপ ব্যবহার থেকে বিরত রাখা সম্পূর্ণ ভিন্ন। টিকটক নির্মাতাদের তৈরি বাজার, যেখানে ইনফ্লুয়েন্সাররা ব্র্যান্ড ডিল থেকে আয় করেন, ২০২৩ সালে Goldman Sachs-এর মতে $২৫০ বিলিয়ন ডলারের সমান। এই বাজারে বাধা সৃষ্টি করলে রাজনৈতিক খরচও স্পষ্ট।

রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভবিষ্যৎ

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পূর্বের কড়া অবস্থান কিছুটা শিথিল করেছেন। অন্যদিকে, টিকটক সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার পরিকল্পনা করছে, যা প্রধান নির্বাহী শো ঝি চিউয়ের জন্য সময় বাড়াতে পারে। তবে যদি সেটি ব্যর্থ হয়, তাহলে জানুয়ারি ১৯ তারিখে অ্যাপটির নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কথা।

যদি নতুন প্রশাসন কোনওভাবে এই সিদ্ধান্ত বদলানোর চেষ্টা করে, সেটি এখনও অনিশ্চিত। তবে এই পরিস্থিতি বাণিজ্য যোদ্ধাদের জন্য এক কঠিন পরীক্ষা হতে চলেছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্লোবাল টাইমস বাংলার শর্তাবলী মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url