১০ বছর পর আবার শুরু হবে এমএইচ৩৭০-এর অনুসন্ধান: মালয়েশিয়ার ঘোষণা

ভারত মহাসাগরে এমএইচ৩৭০ অনুসন্ধানে জাহাজ
ভারত মহাসাগরে এমএইচ৩৭০ অনুসন্ধানে কাজ করছে ওশান ইনফিনিটি
কুয়ালালামপুর, ২০ ডিসেম্বর, (গ্লোবাল টাইমস বাংলা): বিশ্বজুড়ে অন্যতম বড় বিমান দুর্ঘটনার রহস্য উন্মোচনে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে মালয়েশিয়া। দেশটির পরিবহন মন্ত্রী অ্যান্থনি লকে শুক্রবার ঘোষণা করেছেন যে, নিখোঁজ মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট এমএইচ৩৭০-এর ধ্বংসাবশেষ পুনরায় খুঁজে বের করতে তারা নতুন করে অনুসন্ধান শুরু করতে চলেছেন। এই ঘোষণা এমন একটি সময়ে এলো যখন বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার ১০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে।

এমএইচ৩৭০-এর রহস্যময় নিখোঁজ হওয়া

২০১৪ সালের ৮ মার্চ কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংগামী বোয়িং ৭৭৭ মডেলের এই বিমানটি ২২৭ যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু নিয়ে নিখোঁজ হয়। ভিয়েতনামের আকাশসীমায় প্রবেশের ঠিক আগে ট্রান্সপন্ডার বন্ধ হয়ে যায় এবং সামরিক রাডার অনুযায়ী বিমানটি পূর্বনির্ধারিত পথ ছেড়ে আন্দামান সাগরের দিকে চলে যায়। এরপর বিমানটির সাথে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

পরিবহন মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি

পরিবহন মন্ত্রী অ্যান্থনি লকে বলেন, "আমাদের দায়িত্ব এবং অঙ্গীকার নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবারের প্রতি। আমরা আশা করছি, এইবারের অনুসন্ধান ইতিবাচক ফলাফল দেবে এবং পরিবারগুলো closure পাবে।"

পরিবারের প্রতিক্রিয়া এবং প্রস্তাব

নিখোঁজ যাত্রীদের পরিবার থেকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে। যাত্রী জিয়াং হুই, যার মা এমএইচ৩৭০-এর যাত্রী ছিলেন, তিনি বলেছেন, "প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় নিয়েছে। আমরা চাই মালয়েশিয়ান সরকার আরও উন্মুক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করুক, যেমন জনসাধারণের অংশগ্রহণে অনুসন্ধানের জন্য পুরস্কার ব্যবস্থা চালু করা।"

অনুসন্ধানের নতুন প্রস্তাবনা

মালয়েশিয়া এইবার অনুসন্ধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধান সংস্থা ওশান ইনফিনিটি-কে নিযুক্ত করেছে। ২০১৮ সালে তাদের করা শেষ দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও নতুন ডেটা বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি এইবার সফল হওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।

এবারের চুক্তি অনুযায়ী, ১৮ মাস সময়ের মধ্যে ১৫,০০০ বর্গকিলোমিটার (৫,৭৯০ বর্গমাইল) এলাকা জুড়ে অনুসন্ধান চালানো হবে। উল্লেখযোগ্য ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেলে সংস্থাটি ৭০ মিলিয়ন ডলার পাবে। তবে, "কিছু না পাওয়া গেলে, কোন পেমেন্ট দেওয়া হবে না," বলে জানিয়েছেন পরিবহন মন্ত্রী।

প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা

নতুন অনুসন্ধান এলাকা নিয়ে এখনও নির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে মালয়েশিয়ার বিশেষজ্ঞরা এবং ওশান ইনফিনিটি বলছে, তাদের কাছে নতুন ডেটা রয়েছে যা "বিশ্বাসযোগ্য"।

২০১৮ সালের তদন্ত প্রতিবেদনে বোয়িং ৭৭৭-এর নিয়ন্ত্রণ ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়। তবে কে দায়ী এবং কেন বিমানটি এভাবে নিখোঁজ হয়েছিল, তা জানা যায়নি।

স্মরণযোগ্য তথ্য

ফ্লাইটে ১৫০ জন চীনা নাগরিক, ৫০ জন মালয়েশিয়ান এবং ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন এবং কানাডার নাগরিক ছিলেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্লোবাল টাইমস বাংলার শর্তাবলী মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url